গ্রিন টির সঙ্গে চিনি খাওয়া কতটা ক্ষতিকর

গ্রিন টির সঙ্গে চিনি খাওয়া কতটা ক্ষতিকর

52 / 100 SEO Score

ওজন কমানো ও সুস্থ থাকার সহজ পানীয় বলতে এখন অনেকেই আগে গ্রিন টির কথাই বলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অনেকে গ্রিন টি চিনি দিয়ে খান; ফলে গ্রিন টি উপকারিতা কমে যায়, আর গ্রিন টি ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক থেকে উল্টো ওজন বাড়ানোর ঝুঁকিতে ফেলে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণ গ্রিন টিতে কোনো ক্যালরি থাকে না; তাই এটি কম-ক্যালরি স্বাস্থ্যকর পানীয়। কিন্তু তাতে চিনি মিশিয়ে পান করলে গ্রিন টি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত পানীয়তে পরিণত হয়। এক কাপ গ্রিন টির সঙ্গে কয়েক চা–চামচ চিনি মেশালে তার ক্যালরি প্রায় সাধারণ চায়ের সমান বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে। ফলে ওজন কমানোর বদলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই থাকে বেশি।

গ্রিন টি তৈরি হয় Camellia sinensis নামের বিশেষ চা–গাছের কচি পাতা দিয়ে। এই পাতায় থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো, হজম ক্ষমতা বাড়ানো এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

তবে পুষ্টিবিদদের মতে, শুধু চিনি নয়, গ্রিন টিতে মধু, সিরাপ বা অন্য কোনো সুইটনার যোগ করলেও ক্যালরি বেড়ে যায় এবং পানীয়টির মূল স্বাস্থ্য উপকারিতা কমে যায়। অনেকেই ভাবেন, বাদামি চিনি বা আর্টিফিশিয়াল সুইটনার সাধারণ চিনির তুলনায় ‘হেলদি বিকল্প’; বাস্তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে এগুলোও শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই গ্রিন টি পানের সময় কোনো ধরনের চিনি, মধু বা সিরাপ না মেশানোই উত্তম।

পুষ্টিবিদেরা আরও বলেন, গ্রিন টির পুরো উপকার পেতে হলে নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে পান করতে হবে। শুধু কখনো–সখনো এক–দুই কাপ গ্রিন টি খেলে খুব বেশি পরিবর্তন আসে না। অধিকাংশ সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের জন্য দিনে ৩–৪ কাপ গ্রিন টি সাধারণত ঝুঁকিহীন ধরা হয়। তবে যেহেতু গ্রিন টিতে ক্যাফেইন থাকে, তাই খুব রাতে বা খালি পেটে অতিরিক্ত পরিমাণে পান করলে কারও কারও ক্ষেত্রে অস্বস্তি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও হতে পারে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আয়রন শোষণ। গ্রিন টির কিছু উপাদান, বিশেষ করে ট্যানিন ও ক্যাটেচিন, অন্ত্রে আয়রন শোষণে কিছুটা বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে বা নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট খান, তাদের ক্ষেত্রে খাবারের সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন টি না খেয়ে খাবার ও গ্রিন টির মাঝে অন্তত এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিরতি রাখা ভালো।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

  • ওজন কমানো বা সুস্থ থাকার জন্য গ্রিন টি পান করতে চাইলে তা অবশ্যই চিনি ছাড়া পান করুন।
  • দিনে কয়েক কাপের বেশি পান করার আগে নিজের শারীরিক অবস্থা ও ওষুধ সেবনের বিষয়টি মাথায় রাখুন।
  • দীর্ঘমেয়াদি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা, আয়রনের তীব্র ঘাটতি বা হার্টের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্রিন টি পানের অভ্যাস গড়ে তোলা নিরাপদ।

সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে এবং চিনিমুক্ত গ্রিন টি–ই হতে পারে ওজন নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক সুস্থতার সহায়ক এক সহজ পানীয়।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )