
কুড়িগ্রামে ৪ মেট্রিক টন সার জব্দ, ডিলারকে জরিমানা
কুড়িগ্রামে সার জব্দ, সার ডিলারকে জরিমানা, অবৈধ সার মজুত—এই অভিযোগের ভিত্তিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় বিএডিসি ডিলারের গুদাম থেকে ৪ মেট্রিক টন ডিএপি সার জব্দ করেছে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুজ্জামান রিশাদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া ব্যাপারীটারী এলাকার মেসার্স রাদিয়া ট্রেডার্সের গুদাম থেকে গোপনে সার সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। একটি নছিমনে করে ৮০ বস্তা ডিএপি সার (প্রতি বস্তা ৫০ কেজি, মোট ৪ মেট্রিক টন) বিক্রির উদ্দেশ্যে গুদাম থেকে বের করে মাস্টার মোড় বাজার এলাকার ভেতরের রাস্তা দিয়ে নেওয়া হচ্ছিল।
এসময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তারা নছিমনটি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং পরে সারবোঝাই যানটি আটক করেন। খবর পেয়ে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সার ও যানটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় কৃষক আজিজুল হক, আরিফ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন, এই ডিলারের কাছ থেকে নির্ধারিত দামে ও নিয়মিতভাবে সার পাওয়া যায় না। অনেক সময় কৃষকদের বলা হয়, ‘গুদামে সার নেই’; অথচ রাতে গোপনে অতিরিক্ত দামে অন্যত্র সার বিক্রি করা হয় বলে তাদের অভিযোগ। এতে চাষাবাদের মৌসুমে সাধারণ কৃষককে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
নাগেশ্বরী থানার উপপরিদর্শক নাদিম জানান, ‘এসি ল্যান্ড ও ওসির নির্দেশে সারবোঝাই নছিমনটি জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অনুমোদিত ডিলারদের সরকারি সার বিক্রিতে কোনো অনিয়ম বা অনৈতিক সিন্ডিকেটসহ অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হলে তা ফসল উৎপাদনে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং কৃষকের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে।
বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স রাদিয়া ট্রেডার্সের মালিক হালিমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুজ্জামান রিশাদ। তিনি জানান, সরকারি সার অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অপরাধে ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা সার স্থানীয় বৈধ কৃষকদের মধ্যে বিক্রির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ওই বিক্রির পুরো অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

