নদী দখল–দূষণ ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপের দাবি

নদী দখল–দূষণ ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপের দাবি

54 / 100 SEO Score

পার্বত্য অঞ্চলের নদী দখল, নদী দূষণ ও অবৈধ খনন বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী ‘পার্বত্য নদীরক্ষা সম্মিলন’ থেকে। নদী ও পরিবেশ রক্ষায় নীতিনির্ধারক, বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে অবিলম্বে টেকসই নদী ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) শহরের টাউন হল অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা এ সম্মিলনে পার্বত্য অঞ্চলের নদী রক্ষা, সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার সাদাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, শুধু সেগুনগাছের একমুখী চাষ নয়, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক বন পুনরুদ্ধারে গুরুত্ব দিতে হবে। গাছ, ঝরনা ও নদীর পরস্পর সম্পর্ক বুঝে সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে না পারলে পার্বত্য অঞ্চলের নদী রক্ষা সম্ভব হবে না।

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকা সত্ত্বেও পাহাড়ি এলাকায় পাথর লুট, বালু উত্তোলনসহ পরিবেশবিনাশী কার্যক্রম চলতে দেওয়া যায় না। তিনি পার্বত্য নদীরক্ষা সম্মিলন থেকে একটি সুসংগঠিত সিদ্ধান্ত নিয়ে মাসব্যাপী সচেতনতামূলক ও আন্দোলনধর্মী কর্মসূচি নেওয়ার পরামর্শ দেন।

অনুষ্ঠানে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আবু হোরায়রা এবং পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক মো. লুৎফুর রহমান বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলো শুধু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নয়, স্থানীয় জীববৈচিত্র্য, কৃষি, জীবিকা ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। তাই এসব নদীকে বাঁচানো মানে পুরো পার্বত্য জনপদের জীবন ও ভবিষ্যৎকে বাঁচিয়ে রাখা।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠা, অনিয়ন্ত্রিত বালু–পাথর উত্তোলন, বর্জ্য ফেলা ও শিল্পদূষণের কারণে পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলো সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। নদী দখল, দূষণ ও অবৈধ খনন বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ, নিয়মিত মনিটরিং, আপডেট নদী তালিকা প্রণয়ন এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযানের ওপর জোর দেন তাঁরা।

সভার শেষাংশে, পার্বত্য নদীরক্ষা সম্মিলনের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়—নদী ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা ব্যতীত কোনো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন না করা এবং নদী–ঝরনা–বনকে একসঙ্গে বিবেচনায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি নীতি গ্রহণের।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )