
তাড়াশে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রেমিক নিহত
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তাড়াশে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রেমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে ঘটে যাওয়া এ সংঘর্ষে আয়নাল হক (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিকা সাকিরুন খাতুনের দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দেশীগ্রাম উত্তরপাড়ার বাহের আলীর মেয়ে সাকিরুন খাতুন (৩৫) এবং পার্শ্ববর্তী কানপুর পাড়ার মৃত বাদশা শেখের ছেলে আয়নাল হকের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। বিষয়টি পরিবার ও এলাকাবাসীর অজানা ছিল না বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আয়নাল গোপনে প্রেমিকা সাকিরুনের ঘরে ঢোকেন। কিছুক্ষণ পর তাড়াশে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরুর সূচনা হয় যখন সাকিরুনের পরিবারের সদস্যরা ঘরে অপরিচিত একজনকে দেখতে পান। এ সময় সাকিরুনের বাবা, ভাইসহ কয়েকজন আয়নালকে ধরে বেধড়ক মারধর করে আবার ছেড়ে দেন।
প্রথম দফার মারধরে আহত অবস্থায় নিজ বাড়িতে ফিরে যান আয়নাল হক। পরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে তিনি পরিবারের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সাকিরুনের বাড়ির দিকে ফের হামলার উদ্দেশ্যে যান। সেখানে দ্বিতীয় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক আহত হন আয়নাল।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার পরও রাত তিনটার দিকে সেখানে মারা যান তিনি।
ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাকিরুন খাতুনের দুই ভাই আমির হোসেন (৪০) ও নুরুল হক (২৭)-কে গ্রেপ্তার করে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তাড়াশে পরকীয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে প্রেমিক নিহত মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘পরকীয়া সম্পর্কের জেরে সৃষ্টি হওয়া এ সংঘর্ষে আয়নাল হক নিহত হয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে, মামলা হলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে গ্রামজুড়ে আলোচনা–সমালোচনা চলছে এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে। স্থানীয় জনrepresentatives এবং সচেতন মহল মনে করছেন, পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধানে সংলাপ ও সালিসের পরিবর্তে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ায় আরেকটি প্রাণ ঝরে গেল তাড়াশে।

