
নাইজেরিয়ায় ২৫ ছাত্রী অপহরণ, ২ জন উদ্ধার
নাইজেরিয়া ছাত্রছাত্রী অপহরণ চাঞ্চল্যের মধ্যে দেশটির কেব্বি অঙ্গরাজ্যের একটি সরকারি বালিকা আবাসিক বিদ্যালয়ে অস্ত্রধারীদের হামলায় ২৫ জন নারী শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে। সোমবার ভোরে (১৭ নভেম্বর) ঘটা এই হামলায় নিহত হন স্কুলের উপাধ্যক্ষ হাসান ইয়াকুব মাকুকু। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অপহৃতদের মধ্যে দুইজন ছাত্রী অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে ফিরে এসেছে।
স্কুলের অধ্যক্ষ মুসা রাবি মাগাজি জানান, সশস্ত্র দস্যুরা রাতের আঁধারে স্কুলে ঢুকে মেয়েদের বন্দুকের মুখে ধরে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে হামলাকারীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ও হয়।
পালিয়ে আসা দুই ছাত্রী জানিয়েছে, অপহরণকারীরা স্কুল ভবন ঘিরে ফেলে তাঁদের নিয়ে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ঢোকার চেষ্টা করছিল। সুযোগ বুঝে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দু’জন আলাদা দিক দিয়ে পালিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছায়। তাদের পরিবার ও স্থানীয়রা বর্তমানে তাদের পরিচর্যায় রয়েছেন।
নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, অপহৃত ছাত্রীদের সন্ধানে সেনা, পুলিশ, বিশেষ ট্যাকটিক্যাল ইউনিট এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলগুলো আশপাশের জঙ্গলে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী অপহরণের দায় স্বীকার করেনি। তবে স্থানীয়দের দাবি, পশ্চিম নাইজেরিয়ার বিভিন্ন দস্যুর দল মুক্তিপণের জন্য এ ধরনের অপহরণ প্রায়ই ঘটিয়ে থাকে।
উপাধ্যক্ষের স্ত্রী আমিনা হাসান জানান, তাঁর স্বামীকে হত্যার আগে হামলাকারীরা নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হয়। তিনি বলেন, “তারা স্পষ্টভাবে বলেছিল—আমরা তোমাকে হত্যা করতে এসেছি।”
কেব্বির গভর্নর নাসির ইদ্রিস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিবারগুলোকে উদ্ধার আশ্বাস দিয়েছেন। সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াইদি শাইবু বলেছেন—“অপহৃত শিশুদের উদ্ধারই এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সকল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দৃঢ়ভাবে অভিযান চলবে।”
উল্লেখ্য, উত্তর নাইজেরিয়ায় স্কুলে হামলা ও শিক্ষার্থী অপহরণ বিগত কয়েক বছর ধরে ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ২০১৪ সালের চিবক অপহরণের পর থেকে এ অঞ্চলে ১,৫০০ এর বেশি ছাত্রী অপহৃত হয়েছে, যাদের অনেককে কখনোই উদ্ধার করা যায়নি।

