নিলামে উঠছে বিএসসির সেই দুই জাহাজ, নিয়ম মেনে অংশগ্রহণ
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) মালিকানাধীন অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দুই জাহাজ ‘এমটি বাংলার জ্যোতি’ এবং ‘এমটি বাংলার সৌরভ’ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত দরপত্র প্রকাশ করেছে বিএসসি। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, জাহাজ দুটি থেকে শত কোটি টাকারও বেশি লাভ হতে পারে।
নিলামের শর্তাবলি
দরপত্রে অংশগ্রহণের জন্য ১২ হাজার টাকা (১০০ মার্কিন ডলার) দিয়ে শিডিউল পেপার কিনতে হবে।
৪০ লাখ টাকা জামানতসহ দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ৬ জানুয়ারি দুপুর ১২টা।
দরপত্র জমা দেওয়া যাবে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিএসসি অফিসের টেন্ডার বক্সে অথবা আন্তর্জাতিক দরদাতারা ই-মেইলের মাধ্যমেও জমা দিতে পারবেন।
জাহাজগুলোর বিবরণ ও বাজারমূল্য
প্রতিটি জাহাজের ওজন: ৩,৭৮৭ টন।
স্ক্র্যাপ লোহার বর্তমান বাজারমূল্য: প্রতি টন ৫০ হাজার টাকার বেশি।
আনুমানিক মূল্যমান: প্রায় ৪০ কোটি টাকা।
এর সঙ্গে যুক্ত হবে ইনস্যুরেন্স ক্ষতিপূরণ।
মার্চেন্ট মেরিনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন এম আনাম চৌধুরী বলেছেন, সিন্ডিকেট প্রথার বাইরে আন্তর্জাতিক নিলামের মাধ্যমে জাহাজগুলো বিক্রি করায় বিএসসি বড় লাভবান হবে।
জাহাজের ইতিহাস
এমটি বাংলার জ্যোতি: ১৯৮৭ সালের ১৫ মে বিএসসির বহরে যুক্ত হয়।
এমটি বাংলার সৌরভ: একই বছরের ১৫ জুন বহরে যুক্ত হয়।
৩৭ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারির ডলফিন জেটিতে তেল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে পৃথক অগ্নিকাণ্ডে জাহাজ দুটির ডেকসহ বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লোহার কাঠামো অক্ষত থাকে। এগুলোর স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল অনেক আগেই শেষ হয়েছিল এবং ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বহর থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো।
বিএসসির বর্তমান অবস্থা
এই দুটি জাহাজ বহর থেকে বাদ যাওয়ার পর বিএসসির নিজস্ব পাঁচটি এবং ভাড়া নেওয়া একটি অয়েল ট্যাংকার পরিচালিত হচ্ছে। নিজস্ব পাঁচটি জাহাজ আন্তর্জাতিক রুটে পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে।
জাহাজ দুটি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রির সিদ্ধান্ত বিএসসির জন্য একটি লাভজনক উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।