
২৪ দিনেই প্রবাসী আয়ে ভাঙল এক মাসের রেকর্ড
চলতি মার্চ মাসে মাত্র ২৪ দিনেই প্রবাসী আয়ের নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এই সময়ের মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা একক মাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স হিসেবে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাকি সাত দিনেও একই ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চে রেমিট্যান্স ৩৫০ কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, যার পরিমাণ ছিল ২৬৪ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানান, “অর্থ পাচার রোধে সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠালে যে প্রণোদনা ও সুবিধা মিলছে, তা খোলাবাজারের চেয়েও লাভজনক হওয়ায় হুন্ডির প্রতি নির্ভরতা কমেছে।”
রেমিট্যান্সের ইতিবাচক প্রবাহের ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০.০৯ বিলিয়ন ডলারে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন মোট ২,১২৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরের এ সময়ে রেমিট্যান্স ছিল ১,৬৬২ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার পরিবর্তনের পর রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি এসেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই ছাড়া বাকি সব মাসেই রেমিট্যান্স বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনাকালেও এ ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল, যখন হুন্ডি কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, রিজার্ভ কমে গত ৯ মার্চ দাঁড়ায় ১৯.৭০ বিলিয়ন ডলারে, আকু (Asian Clearing Union)-এর ১৭৫ কোটি ডলার পরিশোধের পর। তবে তার আগে রিজার্ভ পৌঁছেছিল ২১.৪০ বিলিয়নে। রিজার্ভ হ্রাসের অন্যতম কারণ ছিল আমদানি দায় পরিশোধে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে এবং আগের বকেয়া প্রায় ৩৩০ কোটি ডলারও পরিশোধ করে ফেলেছে।
এদিকে, একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অর্থ পাচার রোধে গঠিত ১১টি যৌথ বিশেষ টিম কাজ করছে। এসব টিম শেখ হাসিনা পরিবার ও দেশের ১০টি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, অনিয়ম ও জালিয়াতির তদন্ত করছে। এ উদ্যোগগুলোর কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।