১০ হাজার কোটি টাকা লেনদেন বাড়ল মোবাইল ব্যাংকিংয়ে
মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিং বর্তমানে দেশের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। প্রান্তিক পর্যায়ে দ্রুত আর্থিক সেবা পৌঁছানোর পাশাপাশি এটি বিল পরিশোধ, বেতন বিতরণ, কেনাকাটা, এবং রেমিট্যান্স গ্রহণসহ নানান সেবায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা একক মাসের হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে এই অঙ্ক ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। ফলে এক মাসে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
২০২৩ সালের জুন মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ এক লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। এরপর আগস্টে এক লাখ ৩৭ হাজার ৯২১ কোটি এবং সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি মাসেই লেনদেন লাখ কোটি টাকার উপরে রয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের রকেট সেবার মাধ্যমে। পরে বিকাশসহ আরও বেশ কিছু ব্যাংক এই সেবা চালু করে। বর্তমানে বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায়সহ ১৫টি এমএফএস সেবা বাজারে রয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিং এখন শুধু টাকা পাঠানোর মাধ্যম নয়। এর ব্যবহার বিস্তৃত হয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, এবং পানির বিল পরিশোধ, স্কুলের বেতন, সরকারি ভাতা, টিকিট ক্রয়, মোবাইল রিচার্জ ও বীমার প্রিমিয়াম পরিশোধের মতো নানা কাজে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন ছিল মাত্র ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের অক্টোবর মাসে তা প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাহক সংখ্যাও ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ, যা বেড়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৫৭ লাখ।
এমএফএস-এর এই দ্রুত বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে সেবার প্রসার, প্রযুক্তির উন্নয়ন, এবং জনসাধারণের কাছে সহজলভ্যতা। এটি দেশের আর্থিক খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখছে।