হারানো এক নগরীর খোঁজ, মাছির মস্তিষ্কের ম্যাপ: বিদায়ী বছরের কিছু অর্জন
২০২৪ সাল বিজ্ঞানের নানা উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ও অর্জনে ভরপুর ছিল। প্রযুক্তি জগতে এআই-এর দাপট যেমন ছিল, তেমনি মূলধারার বিজ্ঞানে অভূতপূর্ব কিছু সাফল্য মুগ্ধ করেছে বিশ্বকে। এখানে তুলে ধরা হলো বছরের উল্লেখযোগ্য কিছু বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি:
নিউরাল নেটওয়ার্কে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল
এই বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন আমেরিকান বিজ্ঞানী জন হপফিল্ড। তিনি প্রাণীর মস্তিষ্কের নিউরাল নেটওয়ার্কের নকশাকে কাজে লাগিয়ে যন্ত্রকে নতুন কিছু শেখানোর সম্ভাবনা উন্মোচন করেছেন। এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে বুদ্ধিমান যন্ত্রপাতি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রকেট ক্যাচ: মহাকাশ গবেষণায় নতুন অধ্যায়
ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেট এবার মহাকাশ গবেষণায় ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। রকেটটি উৎক্ষেপণের পর নিখুঁতভাবে লঞ্চ প্যাডে ফিরে আসার সময়ে বিশাল যান্ত্রিক বাহু দ্বারা ধরা হয়েছে। এই পদ্ধতি মহাকাশ ভ্রমণ আরও সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব করবে।
মাছির মস্তিষ্কের মানচিত্র
বিজ্ঞানীরা ফলের মাছির মস্তিষ্কের পূর্ণ মানচিত্র তৈরি করেছেন, যাতে এক লাখ ৩০ হাজার মস্তিষ্ক কোষ এবং ৫ কোটি নিউরাল সংযোগের বিশদ বিবরণ রয়েছে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণীর মস্তিষ্ক নিয়ে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বিস্তারিত গবেষণা।
হারানো মায়া নগরীর সন্ধান
মেক্সিকোর জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মায়া সভ্যতার একটি প্রাচীন নগরীর সন্ধান পাওয়া গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ক্যালাকমুল’ নামের এই নগরীতে ৩০-৫০ হাজার মানুষ বাস করত। এখানে পিরামিড, খেলার মাঠ এবং অ্যাম্ফিথিয়েটারের মতো স্থাপনা ছিল।
বিলুপ্ত সাদা গণ্ডার পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
বিশ্বে মাত্র দুটি জীবিত উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গণ্ডার রয়েছে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষাগারে সাদা গণ্ডারের একটি ভ্রূণ তৈরি করে সফলভাবে আরেকটি গণ্ডারের গর্ভে প্রতিস্থাপন করেছেন। যদিও প্রক্রিয়ায় মা গণ্ডার মারা যায়, তবে ভ্রূণটি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছিল। এটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর পুনরুদ্ধারের নতুন আশা দেখাচ্ছে।
প্রকৃতি সংরক্ষণে সাফল্য
দশ বছরব্যাপী গবেষণায় দেখা গেছে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ সফল হয়েছে। এর মধ্যে ছিল চিনুক স্যামনের ডিম ফোটানো এবং আক্রমণাত্মক শৈবাল ধ্বংস করার মতো প্রকল্প।
পূর্ণ সূর্যগ্রহণে কোটি মানুষের মুগ্ধতা
এই বছর মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার কোটি কোটি মানুষ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করেন। এটি ছিল একটি বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য, যা ২০১৭ সালের সূর্যগ্রহণের চেয়েও বিস্তৃত এবং চিত্তাকর্ষক।
২০২৪ সাল বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে একটি উল্লেখযোগ্য বছর হয়ে থাকবে। এ বছরের অর্জনগুলো ভবিষ্যতের উদ্ভাবনের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।