শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের মধ্যে ভারসাম্য রাখা জরুরি
পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত দাও।’ এসব আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা মহাভুল। যেখানে দৈহিক ইবাদত যেমন নামাজের নির্দেশ রয়েছে, সেখানে আর্থিক ইবাদত যেমন জাকাতও গুরুত্বপূর্ণ।
দুঃখজনকভাবে, সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা শুধু শারীরিক ইবাদতকেই দ্বিনের মূল লক্ষ্য মনে করেন, আর্থিক ইবাদত যেমন জাকাত, দান বা সদকায় বিমুখ থাকেন। তারা কেবল তাদের মনগড়া ধর্মীয় রীতি অনুসরণ করেন, এবং এর ফলে দ্বিনের সব দিক পালন করা হয় না। এ বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস করো এবং কিছু অংশকে প্রত্যাখ্যান করো?’ (সুরা: বাকারাহ, আয়াত: ৮৫)।
অনেকেই শারীরিক ইবাদতের ক্ষেত্রেও বিভক্তি তৈরি করেন—কেউ কেবল পীরের নির্দেশিত অজিফা পড়েন, আবার কেউ কেবল কোরআন তিলাওয়াত করেন। তেমনি, আর্থিক ইবাদতের ক্ষেত্রেও বিভক্তি দেখা যায়—কিছু মানুষ মসজিদে দান করেন, তবে মক্তব বা মাদরাসা পরিচালনায় একই মনোভাব দেখান না।
এটি একটি বড় ত্রুটি, কেননা ইসলামে শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের মধ্যে ভারসাম্য রাখা জরুরি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না।’ (সুরা: বাকারাহ, আয়াত: ২০৮)
নামাজ, রোজা, তাহাজ্জুদ, জিকিরের মতো আর্থিক ইবাদতও যেমন জাকাত, হজ, সদকা, আত্মীয়তার হক আদায় করা—এগুলো সব মুমিনের কর্তব্য। আল্লাহ কোরআনে শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতকে একত্রে উল্লেখ করেছেন, যেমন—‘আর সংগ্রাম করো আল্লাহর পথে তোমাদের সম্পদ ও জীবন দ্বারা।’ (সুরা: তাওবা, আয়াত: ৪১)।
আল্লাহ তাআলা কোরআনের বিভিন্ন স্থানে আর্থিক ইবাদতকে শারীরিক ইবাদতের সঙ্গে যুক্ত করেছেন, কারণ তিনি জানেন মানুষের সম্পদে মোহ ও দুর্বলতা। সুতরাং, আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করলে, একসময় জীবন উৎসর্গ করার মানসিকতা তৈরি হয়।
সঠিকভাবে দ্বিন পালনের জন্য শারীরিক ও আর্থিক ইবাদতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিক পথ প্রদর্শন করুন। আমিন।