শান্তি ও আধ্যাত্মিকতার প্রাণকেন্দ্র মদিনা
মদিনাতুর রাসুল—এই নামের উচ্চারণেই মুমিন হৃদয়ে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে। এটি এমন একটি স্থান, যা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ, প্রিয় নবীজির (সা.) বিশ্রামের জায়গা। মক্কা থেকে হিজরতের পর এই পবিত্র নগরীতেই ইসলামের নবযুগের সূচনা হয়েছিল। মদিনা শুধু একটি শহর নয়; এটি প্রেম, শ্রদ্ধা এবং আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন।
মদিনার জন্য নবীজির দোয়া
নবী করিম (সা.) মদিনার জন্য দ্বিগুণ বরকতের দোয়া করেছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! মক্কায় তুমি যে বরকত দিয়েছ, মদিনায় তার দ্বিগুণ বরকত দাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৮৫)
মদিনার প্রতি আবেগ
প্রিয় নবীজি (সা.) মদিনাকে দেখে আনন্দিত হতেন। সফর শেষে মদিনায় ফিরে আসার পথে তিনি তার বাহন দ্রুত চালাতেন। আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) সফর শেষে মদিনার দিকে তাকিয়ে দ্রুত চলতেন, তার ভালোবাসার জন্য। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৮৬)
মদিনায় মৃত্যুর ফজিলত
নবী (সা.) বলেছেন, মদিনায় মৃত্যু হলে তিনি শাফায়াত করবেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস: ৩৯১৭) মদিনায় মৃত্যু মানে হলো পবিত্র স্থানে ইন্তিকাল করা, যেখানে নবীজি (সা.) শায়িত আছেন।
মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ভয়াবহতা
নবী (সা.) মদিনাবাসীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, যে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৭৭)
দাজ্জাল আসতে পারবে না
মদিনায় ফেরেশতাদের পাহারা থাকবে, তাই দাজ্জাল মদিনায় প্রবেশ করতে পারবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭৪৭৩)
মদিনার পবিত্রতা
নবী (সা.) মদিনাকে পবিত্র ঘোষণা করেছেন। এই এলাকার নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে গাছপালা কাটা ও জীবজন্তু শিকার নিষিদ্ধ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩২০৮)
মদিনা আমাদের জন্য প্রেম, ঐক্য এবং ত্যাগের শিক্ষা। এখানেই ইসলামের সমাজব্যবস্থার প্রথম ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। মদিনার প্রতি আমাদের ভালোবাসা যেন আল্লাহ এবং নবীজির (সা.) সুন্নাহর প্রতি আমাদের আনুগত্যের প্রতিফলন হয়।