মুছে ফেলা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়ির নাম
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠাবাড়ী জমিদারবাড়ির কাছারিবাড়ির নাম মুছে ফেলা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই স্থানটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজ হাতে উদ্বোধন করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এটি স্থানীয় ও বহিরাগত দর্শনার্থীদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে সম্প্রতি তার নাম সরিয়ে দেওয়ায় সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
ঐতিহাসিক পটভূমি
১৯২৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জমিদার প্রমোদ চন্দ্র রায় চৌধুরীর আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আঠাবাড়ীতে আসেন। এই জমিদারবাড়ির কাছারিবাড়ি তিনি উদ্বোধন করেন। তার স্মৃতি বহন করা এই ভবনটি ১৯৬৮ সালে আঠারবাড়ী ডিগ্রি কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। জমিদারবাড়িটি কারুকার্যমণ্ডিত এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। প্রতি বছর কবির জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকীতে এখানে বহু দর্শনার্থী আসতেন।
বর্তমান অবস্থা
সম্প্রতি কাছারিবাড়িটি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম অপসারণ করা হয়েছে। আগে ভবনের সামনে তার চকচকে নামটি সুন্দরভাবে লেখা ছিল। এখন সেটি মুছে ফেলার পর কাছারিবাড়ি নীরব এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় জনগণ এবং সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস দেখায়নি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম মুছে ফেলার পর দর্শনার্থীদের আগ্রহও কমে গেছে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
রবীন্দ্রনাথের এই সফর কেবল আঠাবাড়ীর নয়, বরং সমগ্র ময়মনসিংহ অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি স্মৃতিচিহ্ন। ১৯২৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কবি ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে পৌঁছান। সেখান থেকে মুক্তাগাছার জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী তাকে বরণ করেন। কবি ওই সফরে পুত্র রথীন্দ্রনাথ, পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী এবং বেশ কয়েকজন সহচরসহ ময়মনসিংহে ভ্রমণ করেন।
উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত এই স্থানের ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং তার নাম পুনর্বহাল করার জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রয়োজন। এটি শুধু স্থানীয় সংস্কৃতি নয়, জাতীয় গৌরবেরও অংশ।