মহানবী (সা.)-এর যুগে সাহাবিরা যেসব পেশায় ছিলেন
ইসলামে জীবিকা নির্বাহের গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকের ধারণা, সাহাবায়ে কিরাম শুধু ধর্মের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং জীবিকা নির্বাহের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে আসলে সাহাবিরা ধর্মের পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। মক্কার সাহাবিরা ব্যবসায় ও মদিনার সাহাবিরা কৃষিকাজে নিয়োজিত ছিলেন।
নবীযুগে সাহাবিদের বিভিন্ন পেশা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১. প্রহরী: ওমর (রা.), সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.), সাদ বিন মুআজ (রা.) এবং আবু আইয়ুব আনসারী (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রহরী ছিলেন।
২. পশু পালক: মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উট চরাতেন।
৩. চিঠি লেখক: জায়েদ বিন সাবিত (রা.) মহানবী (সা.)-এর জন্য চিঠি লিখতেন এবং বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।
৪. জাকাত কালেক্টর: উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.), খালিদ বিন সাঈদ (রা.), মুআজ বিন জাবাল (রা.), উবাই বিন কাব (রা.) এবং আদি বিন হাতেম (রা.) জাকাত সংগ্রহ করতেন।
৫. চিকিৎসক ও ডাক্তার: হারিস বিন কালাদাহ (রা.) এবং রিফাআহ বিন ইয়াসরিবি (রা.) চিকিৎসা করতেন।
৬. হিজামাকারী: আবু তাইবা আল হাজ্জাম (রা.), সালিম বিন আবি সালিম (রা.) এবং ইয়াসার আবু হিন্দ (রা.) শিঙা লাগানোর কাজ করতেন।
৭. গোরখনক: আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ (রা.) এবং আবু তালহা আল আনসারী (রা.) কবর খনন করতেন।
৮. শ্রমিক: আবু মাসউদ (রা.), আবু হুরায়রা (রা.) এবং আবু আকিল (রা.) শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
৯. রাজমিস্ত্রি: রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবিরা মসজিদ নির্মাণে অংশ নিয়েছিলেন। আম্মার বিন ইয়াসির (রা.) প্রথম ইসলামী স্থপতি ছিলেন।
১০. কামার: খাব্বাব (রা.) এবং আবু ইউসুফ বারা বিন আওস (রা.) কামারের কাজ করতেন।
১১. দর্জি ও অন্যান্য পেশা: উসমান বিন তালহা (রা.) দর্জির কাজ করতেন, এবং বিভিন্ন সাহাবি যেমন, নাবহান আত তাম্মার (খেজুর বিক্রেতা), আবু রাফি (রাখাল), আবু শাইবা (সবজি বিক্রেতা) প্রভৃতি পেশায় নিযুক্ত ছিলেন।
সাহাবায়ে কিরাম জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে ইসলামি জীবনযাপন করতেন, যা প্রমাণ করে যে ধর্ম এবং দুনিয়াবি দায়িত্ব একসঙ্গে পালন করা সম্ভব।