
মন্ত্রীসভা বৈঠকে ট্রাম্পের ঘুমকাণ্ড ও শারীরিক সক্ষমতার বড়াই
নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের ঘুমকাণ্ড, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প, ট্রাম্পের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা তোলপাড় সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাজের গতি ও পরিধি কমছে—এমন তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ প্রকাশের পর প্রতিবেদনটিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ঠিক এর পরের মন্ত্রিসভার বৈঠকেই নিজের আচরণ দিয়ে যেন সেই সমালোচনাকেই উসকে দিলেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের তথ্যমতে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরের পর শুরু হওয়া ওই মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতেই প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ট্রাম্পের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে নিজেই বক্তব্য দেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ‘২৫ বছর আগে যেমন ছিলাম, এখন তার চেয়েও বেশি চাঙা।’ এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইঙ্গিত করে ‘স্লিপি জো’ বলে ব্যঙ্গও করেন তিনি।
কিন্তু ফিটনেসের এ বড়াইয়ের পর বৈঠকের বাকি দেড় ঘণ্টা ধরে বারবার তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় দেখা যায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্পকে। বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক যখন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্যনীতির প্রশংসা করছিলেন, তখনই প্রথমবারের মতো চোখ বুজে ঢলে পড়তে দেখা যায় ট্রাম্পকে। পরে মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্য স্কট টার্নার, ব্রুকি রুলিনস ও লিন্ডা ম্যাকমাহন কথা বলার সময়ও তাকে বারবার চোখ পিটপিট করতে এবং মাথা নুইয়ে ঘুমাতে দেখা যায়।
বৈঠকের একপর্যায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বক্তব্য দিচ্ছিলেন ঠিক তার পাশের চেয়ার থেকে। কক্ষের মধ্যে হঠাৎ কিছু শব্দ হলে চমকে উঠে নড়েচড়ে বসেন ট্রাম্প, কিন্তু মুহূর্ত পর আবারও চোখ বুজে ফেলেন—যা ক্যামেরাবন্দি হয় উপস্থিত একাধিক সাংবাদিকের কাছে।
বয়স ও কর্মক্ষমতা নিয়ে ইতিমধ্যে চলমান আলোচনার মধ্যে ক্যাবিনেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ট্রাম্পের ঘুমকাণ্ড নতুন করে সমালোচনা উসকে দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দৈনিক কাজের সময়, নীতিনির্ধারণী বৈঠকে উপস্থিতি এবং কূটনৈতিক যোগাযোগ—সব ক্ষেত্রেই আগের তুলনায় ট্রাম্প এখন অনেকটাই কম সক্রিয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকের এ ঘটনার পর সে বিশ্লেষণ আবারও সোশ্যাল মিডিয়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।
তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প আসলেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কি না—এ প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি শুধু বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট প্রতিদিনই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তার ট্রাম্পের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই।’
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের বছর সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য ও মানসিক সতর্কতা এখন মার্কিন ভোটারদের কাছে বড় একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্পের এ ধরনের আচরণ প্রতিপক্ষের হাতে বাড়তি অস্ত্র তুলে দিয়েছে বলেই মনে করছেন তারা।

