
মনপুরায় ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভে হামলার অভিযোগ, আহত ৯
ভোলার মনপুরা উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে বের হলে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৩০ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বাংলাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিলেন জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, চাল বিতরণে বড় ধরনের পক্ষপাত ও অনিয়ম হয়েছে। ১,৫২০ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের মাত্র ১৫০ জনের কাছে কার্ড পৌঁছেছে, বাকি অধিকাংশ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে বিএনপি ও প্রশাসন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মধ্যে।
জামায়াতে ইসলামীর মনপুরা উপজেলা আমির মাওলানা জসিম উদ্দিন বলেন, “প্রশাসক নাছির উদ্দিনের মাধ্যমে বিএনপির সঙ্গে মিলে চাল বিতরণে অনিয়ম করা হচ্ছে। আমরা এর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতেই মিছিল করি, তখন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়।”
আহতদের মধ্যে মো. কাওসার, মো. রাসেল, রাশেদুল ইসলামসহ তিনজনকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ছয়জনকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে স্থানীয় বিএনপি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মনপুরা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা ইউপি প্রশাসককে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের কর্মীরা বাধা দিলে ধস্তাধস্তি হয়।”
অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলনের মনপুরা উপজেলা সভাপতি মুফতি এনায়েত উল্লাহ বলেন, “আমরা প্রশাসকের কাছে প্রশ্ন করতে গিয়েছিলাম চাল বণ্টনে এই বৈষম্যের কারণ কী—এটিকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা বলা হলে তা ভিত্তিহীন।”
এ বিষয়ে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন বলেন, “ঈদ উপলক্ষে ১৫ টন ২০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কার্ড বিতরণ করেছেন ইউপি সদস্যরা। কোন দলের লোক পেয়েছে বা পায়নি, সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। যারা প্রকৃত দুস্থ, তাদের মধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে।”
মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান কবির বলেন, “বিক্ষোভ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।”
তবে জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।