ব্যাংকের ওপর আস্থা কমায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছে মানুষ
ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা হ্রাস পাওয়ায় বর্তমানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়ছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সঞ্চয়পত্র বিক্রি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে, যা আগের অর্থবছরের বেশিরভাগ সময় ছিল নেতিবাচক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরও মোট চার হাজার ১০৯ কোটি টাকা নেট পজিটিভ অবস্থায় ছিল। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে নেট বিক্রি আট হাজার ৩৩২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, বিশেষ করে সেপ্টেম্বর মাস থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেলেও চলতি অর্থবছরে এটি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ বেশি অর্থ দিতে হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এক হাজার ২৬৪ কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল।
বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ব্যাংকের ব্যর্থতার কারণে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার উদ্বেগ বেড়েছে। ফলে, মানুষ ব্যাংকের চেয়ে সঞ্চয়পত্রকে অধিক নিরাপদ মনে করে সেখানে বিনিয়োগ করছে।
অতীত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রিতে ঋণাত্মক প্রবণতা ছিল এবং ওই সময়ে আগের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে সরকারকে বিক্রির চেয়ে ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকার ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় কম।
ব্যাংকের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের এই ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।