বিশ্ব ইজতেমার ময়দান ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ
২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতির প্রাক্কালে ২০২৪ সালের জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় উত্তেজনা ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল (১২ ডিসেম্বর) দিনভর বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা ২০১৮ সালের শৃঙ্খলা ভঙ্গের স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করেছে।
হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ
গতকাল মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের বিরুদ্ধে সাদপন্থীদের গাড়ি ভাঙচুর এবং তাদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে সাদপন্থী আয়োজক কমিটির শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি মাওলানা বসিরসহ পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হন। আহতদের গোপনগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার সূত্রপাত হয় সাদপন্থীদের ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ নিয়ে। মন্নুগেট এলাকায় মাওলানা জুবায়েরের পাঁচ শতাধিক অনুসারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। প্রায় এক ঘণ্টার এই অবরোধে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
অনুমতি নিয়ে বিতর্ক
গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের তত্ত্বাবধানে প্রথম ধাপের জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। সাদ অনুসারীরা দ্বিতীয় ধাপে ২০-২৫ ডিসেম্বর জোড় ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তে তাদের এই অনুমতি প্রত্যাখ্যান করা হয়।
গতকাল সকালে সাদপন্থী মুরব্বিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করলে জুবায়ের অনুসারীরা বাধা দেন। পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় সাদপন্থীরা ময়দানের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে তাদের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় এবং পাঁচজন আহত হন।
উভয়পক্ষের বক্তব্য
জুবায়েরপন্থী আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, সাদ অনুসারীরা অবৈধভাবে ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। অন্যদিকে সাদ অনুসারীদের দাবি, তারা ময়দানে প্রবেশ করেননি; বরং শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
পুলিশের ভূমিকা
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, “জুবায়ের অনুসারীরা সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ঘটনার বিচার দাবি করেন এবং সাদ অনুসারীদের একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করেন।”
বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে এই উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে ভবিষ্যতে আরও শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কা করা হচ্ছে।