বন্যা পরিস্থিতি : ঘরহারাদের ত্রাণের জন্য অপেক্ষা
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের বাসিন্দা কিতাব জান (৫০) তাঁর মাটির ঘরটি বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়ার পর চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহায়তা তিনি এখনো পাননি। একই অবস্থা কৈচাপুর ইউনিয়নের মোফাজ্জল হোসেনেরও, যার ঘরও বন্যায় ধ্বংস হয়েছে। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, কিছু এলাকায় যোগাযোগ সমস্যার কারণে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে, তবে সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর পোড়াগাঁও ইউনিয়নের আটভাইপাড়া গ্রামে প্রায় ৫০টি বাড়ি বন্যায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। হামিদুল ইসলামসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, তাঁরা ঘরহারা হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। হামিদুল বলেন, ‘ছয় দিন পর একবার এক সের চাল পেয়েছি, যা লবণ দিয়ে খেয়েছি।’ গ্রামের রাজ্জাক মিয়াও জানিয়েছেন, পাঁচ দিন ধরে তাঁরা অন্যের দেওয়া খাবার খাচ্ছেন, কিন্তু তাঁদের গ্রামে কেউ ত্রাণ দিতে আসেনি।
নয়াবিল ইউনিয়নের খরিশাকুড়া গ্রামের কান্তি কল্যাণ বর্মণের ঘরে দুর্গাপূজার সময়ও কোনো খাবার ছিল না। একই অবস্থা সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রায় ১০০টি পরিবারের, যারা ত্রাণ সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছেন।
ময়মনসিংহের তিন উপজেলা ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট ও ফুলপুরে বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে, তবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন ধানের। প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আমনের আশায় ছেড়ে দিয়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা এখন খাদ্য সঙ্কটের মুখোমুখি, কারণ তাঁদের ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ড. নাসরীন মুক্তি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য তালিকা করে দ্রুত সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।