পোড়া সচিবালয়ে কুকুরের দেহ, সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ল বৈদ্যুতিক স্পার্ক
ঢাকার সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও নাশকতার অভিযোগকে ঘিরে জনমনে ব্যাপক জিজ্ঞাসা সৃষ্টি হয়। বৈদ্যুতিক লুজ কানেকশন থেকে আগুন লাগার কথা বলা হলেও ছুটির দিনে এ অগ্নিকাণ্ড, বিভিন্ন জায়গায় আলাদা কক্ষে আগুন, কুকুরের মৃতদেহ এবং সাদা পাউডারের উপস্থিতি ঘটনাকে ঘিরে সন্দেহ বাড়ায়।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেয়া প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনের ছয় তলায় বৈদ্যুতিক লুজ কানেকশন থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। সিসিটিভি ফুটেজে ২৬ ডিসেম্বর রাত ১:৩৬ মিনিটে একটি বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে ধীরে ধীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ার দৃশ্য ধরা পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে একটি কুকুরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, যা ছয় তলার পূর্ব পাশে অবস্থান করছিল। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কুকুরটি ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে একটি চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়ে। তবে কীভাবে এটি ভবনে প্রবেশ করল, তা সিসিটিভিতে ধরা পড়েনি।
তদন্ত কমিটির সদস্য বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইয়াসির আরাফাত জানান, আগুনের সূত্রপাত ভবনের পশ্চিম সাইডের কর্নারের সিলিংয়ে ছিল। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা ফুটেজের ২৪ ঘণ্টার বিশ্লেষণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, সাত নম্বর ভবনের পূর্ব ও পশ্চিম অংশে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে আগুন জ্বলছে। এ বিষয়ে বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াছির আরাফাত খান জানান, এসব ছবি অনেক পরের সময়ের, যা আগুন ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ।
সচিবালয়ে সাদা পাউডারের উপস্থিতি ও ছুটির দিনে আগুন লাগার বিষয়গুলো নাশকতার তত্ত্ব উত্থাপন করলেও তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ ও পরীক্ষাগারের ফলাফলে কোনো বিস্ফোরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এটি কোনো নিয়ন্ত্রিত ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের ব্যবহার ছিল না।
তদন্ত কমিটি ঘটনাটিকে নাশকতা নয়, বরং বৈদ্যুতিক ত্রুটির ফলাফল হিসেবে উল্লেখ করেছে।