পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির দাম কমেছে, তবে আলুর দাম এখনও চড়া

পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির দাম কমেছে, তবে আলুর দাম এখনও চড়া

বাজারে পেঁয়াজ ও সবজির সরবরাহ বাড়ানোর ফলে দাম কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে, রাজধানীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে, আলু এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম এখনও চড়া রয়েছে।

ডিমের ডজন দাম ১৫০ টাকায় স্থির থাকলেও, কিছু জায়গায় ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি, ছোট পেঁয়াজ এবং পেঁয়াজপাতা বাজারে আসায় এই নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। এছাড়া শীতকালীন সব ধরনের সবজির সরবরাহ বাড়ায়, তাদের দামও কমেছে।

এই তথ্যগুলো রাজধানীর তেজগাঁও এবং মহাখালী কাঁচাবাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার ঘুরে জানা গেছে।

বাজারে ছোট পেঁয়াজ এবং পেঁয়াজপাতা কেজি ৮০ টাকায়, দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিছুটা দাম কমে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৯০ টাকায়।

তেজগাঁওয়ের মুরগি বিক্রেতা স্বপন হোসেন বলেন, “বাজারে সবজির দাম কমে আসায় মুরগির চাহিদা কিছুটা কমেছে, যার ফলে মুরগির দামও কমেছে।”

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ ৫ থেকে ১০ টাকা কমে ৮৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে, খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে প্রতি লিটার ১৭২ থেকে ১৭৫ টাকা, দেশি রসুন কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, এবং আমদানি করা রসুন কেজি ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের প্রতি ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে কোথাও কোথাও ১৪৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর ফলে কিছু সবজির দাম কমলেও, এখনো বেশ কিছু সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। শিমের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পাকা টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ধুন্দল ৭০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, নতুন আলু ১২০ টাকা, পুরনো আলু ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি এবং বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মহাখালী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল হালীম বলেন, “বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বেড়েছে, এতে সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। সামনে দাম আরো কমতে পারে।”

দিনাজপুরের হিলি বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। গত ১৪ নভেম্বর প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও, গতকাল তা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। বিক্রেতারা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বেশি হওয়ায় দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। আমদানি বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, “কিছুদিন আগে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি কমে গিয়েছিল, তখন প্রতি কেজি ৯০ টাকা পাইকারি কিনে ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। তবে এই সপ্তাহে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে, তাই দাম কমে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় কিনে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করছি।”

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শীতকালীন সবজির আমদানি বেড়ে দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। সীতাকুণ্ড পৌর সদরের মহোন্তের হাটের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী মো. করিম উল্লাহ বলেন, “পাইকারি বাজারে কাকরোল ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ফুলকপি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ঝিঙা ৪০ টাকা, লাউ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে এই সবজিগুলি দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (1 )