পহেলা বৈশাখেও জমল না বাজার, ব্যবসায়ীদের হতাশা

পহেলা বৈশাখেও জমল না বাজার, ব্যবসায়ীদের হতাশা

ঈদুল ফিতরের মাত্র দুই সপ্তাহ পরেই এসেছে পহেলা বৈশাখ। অথচ জাতীয় উৎসব হিসেবে এই নববর্ষ ঘিরে ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরই বড় ধরনের বিক্রির আশা করেন। কিন্তু এবার ঈদের পরপরই বৈশাখ পড়ে যাওয়ায় আগ্রহে ভাটা পড়েছে সাধারণ মানুষের। আর এরই প্রভাব পড়েছে বাজারে—পোশাক, মিষ্টি, ফুল কিংবা মাটির তৈজসপত্র—সব কিছুতেই বিক্রিবাট্টা কম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈশাখ ঘিরে ক্রেতাদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। ঈদে খরচ হয়ে যাওয়ার কারণে এবার বৈশাখী কেনাকাটায় আগ্রহ কমেছে। তারা বলছেন, যদি ঈদ ও বৈশাখের মধ্যে কিছুদিনের ব্যবধান থাকত, তাহলে মানুষ বাজেট করে আলাদা প্রস্তুতি নিতে পারত।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, “সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। তারা এক উৎসবের কেনাকাটাতেই সব কিছু সারছেন। তাই বৈশাখ ঘিরে কেনাকাটা এবার আশানুরূপ হয়নি।”

ঈদ ও বৈশাখ মিলিয়ে দুই উৎসবে দেশের বাজারে প্রতি বছর প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় বলে ধারণা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর। কিন্তু এবারের বাজার অর্ধেকও পূরণ হয়নি বলে মনে করছেন তারা।

দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোও বলছে একই কথা। অঞ্জনসের প্রধান নির্বাহী শাহীন আহমেদ বলেন, “বৈশাখ এবার ঈদের পরপর হওয়ায় আমরা সীমিত প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তবে গত বছরের তুলনায় কিছুটা ভালো হলেও সাধারণ অর্থে বৈশাখী বাজার জমেনি। আগামী বছর হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।”

ফ্যাশন এন্টারপ্রেনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এফইএবি) সভাপতি আজহারুল হক আজাদ বলেন, “এবার আয়োজন ছিল ছোট, প্রচারণাও কম হয়েছে। ছুটির পর অফিস খুললেও অনেকেই এখনও কাজে ফেরেননি—এ কারণেও বাজার জমেনি।”

অন্যদিকে, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “গ্রামীণ মেলা, সাংস্কৃতিক আয়োজন—এসব এখন হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ এসব কেন্দ্র করে প্রচুর মানুষের আয় হতো। আগে পহেলা বৈশাখে যে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতো, তা এখন অনেকটাই কমে গেছে।”

সব মিলিয়ে উৎসবের আনন্দ থাকলেও, বৈশাখ ঘিরে অর্থনীতির চাকা এবার ঘুরছে বেশ ধীর গতিতে—এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS Wordpress (0) Disqus ( )