
পবিপ্রবিতে সাবেক উপাচার্যের ছেলেসহ ছয় কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের ছেলে শাওন চন্দ্র সামন্ত তনুসহ ছয় কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া, আরও ২৬ জন কর্মচারীকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া চলছে।
অনিয়ম ও উচ্চ আদালতের নির্দেশ
পবিপ্রবির বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়াই কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় এই ছয় কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা বরখাস্তকালীন সময় কোনো খোরপোষও পাবেন না।
কোন কোন কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন?
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন:
শাওন চন্দ্র সামন্ত তনু – সাবেক উপাচার্যের ছেলে
আয়েশা সিদ্দিকা – উপ-রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন বাদলের স্ত্রী
মো. আরিফুর রহমান পিয়েল – কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েলের ভাই
মো. হাফিজুর রহমান – পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের ভাই
তানভীর হাসান স্বাধীন – দুমকি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ছেলে
তাকছিনা নাজনীন – জেলা যুবলীগের সম্পাদক সৈয়দ সোহেলের স্ত্রী
কীভাবে এই অনিয়ম হয়েছিল?
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর এবং তার আগের কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডের ৫২তম সভায় ৫৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সেকশন অফিসার পদে ৩ জন নিয়োগের কথা থাকলেও ৬ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় এবং সবাই সেদিনই তড়িঘড়ি করে যোগদান করেন।
উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ
এই অনিয়মের বিরুদ্ধে শামসুল হুদা রিফাত নামে এক চাকরিপ্রত্যাশী হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন, যার শুনানির পর গত বছরের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট সাবেক উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ চারজনের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
পরবর্তী পদক্ষেপ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, ২৬ জন কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান।
এই বরখাস্তের ঘটনায় পবিপ্রবির নিয়োগ ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।