আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

52 / 100 SEO Score

নোয়াখালীতে যুবক খুন, বেগমগঞ্জ হত্যা, আধিপত্য বিস্তার বিরোধ — নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুর্বৃত্তরা শুক্রবার রাতে আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কান কাটা কাদিরা (৪২) নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চেরাংবাড়ির দরজায়। নিহত কাদের চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোফরান মিয়ার ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ

স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিছুদিন ধরে কাদেরের সঙ্গে স্থানীয় একদল যুবকের বিরোধ চলছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেই বিরোধের জেরে দুর্বৃত্তরা তাকে ধরে বেধড়ক পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে হত্যাকারীরা মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

রাতেই খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। শনিবার দুপুরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত কাদের সম্পর্কে জানা গেছে

স্থানীয়দের দাবি, কাদের ছিলেন এলাকায় প্রভাবশালী একজন যুবক এবং তার বিরুদ্ধে মারামারি, মাদক ও চাঁদাবাজি–সংক্রান্ত চারটি মামলা রয়েছে। এ কারণে স্থানীয়ভাবে তার সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,

“কাদেরের সঙ্গে একাধিক দলের আধিপত্য নিয়ে সমস্যা ছিল। এর আগেও কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবার প্রাণ গেল।”

পুলিশের বক্তব্য

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন,

“নিহত কাদের জিলানী অপরাধ জগতে জড়িত ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে তার তেমন যোগাযোগ ছিল না। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।”

তিনি আরও জানান,

“খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দায়ীদের শনাক্ত করা হবে।”

স্থানীয়দের ধারণা : পুরনো বিরোধেই মৃত্যু

স্থানীয়দের মতে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এলাকায় আগে থেকেই দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। নিহত কাদের ছিলেন একপক্ষের ঘনিষ্ঠ সমর্থক।

একজন স্থানীয় যুবক বলেন,

“এখানে দুই দলের মধ্যে অনেক দিন ধরেই কোন্দল চলছে। কাদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হয়।”

এলাকায় উত্তেজনা, নিরাপত্তা জোরদার

ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে। সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াতে চেরাংবাড়ি ও হাজীপুর এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন,

“অবস্থার অবনতি ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি।”

পটভূমি

বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন বহুদিন ধরেই স্থানীয় আধিপত্য, দলীয় কোন্দল ও চাঁদাবাজি নিয়ে উত্তপ্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রায়ই সেখানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে থাকে।
তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ ঘটনাও একই আধিপত্য-সংঘাতের ধারাবাহিকতা।

সূত্র: স্থানীয় সংবাদদাতা | নোয়াখালী প্রতিনিধি

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )