নামাজ যেভাবে মুমিনের জীবন পাপমুক্ত করে

ইসলামের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ হলো নামাজ, যা দ্বিতীয় ভিত্তি হিসেবে পরিচিত। ঈমানের পর ইসলামে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। কোরআন মাজিদে ৮৩ বার নামাজের উল্লেখ করা হয়েছে, যা এর গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

নামাজে ঈমানের পরিচয়: পবিত্র কোরআনে মুমিন-মুত্তাকিদের পরিচয় দেওয়ার সময় ঈমানের পরই নামাজের উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদের যা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা বাকারাহ, আয়াত: ৩)।

নামাজ সবার জন্য সবসময়: ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ ও রোজা ধনী-গরিব সবার জন্যই ফরজ। তবে হজ ও জাকাতের বিধান শুধু ধনীদের জন্য প্রযোজ্য। অসুস্থ হলে রোজা কাজা করা যায়, কিন্তু নামাজে বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া কাজার সুযোগ নেই। আল্লাহ বলেন, ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯১)।

নামাজের বিধান ঊর্ধ্বলোকে: মহান আল্লাহ নবীজী (সা.)-কে মিরাজের মাধ্যমে সাত আসমান পেরিয়ে ঊর্ধ্বলোকে নিয়ে গিয়ে নামাজের বিধান দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রথমে উম্মতের জন্য ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছিল, পরে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়। আল্লাহ বলেন, এই পাঁচই ৫০-এর সমতুল্য হবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৩)।

নামাজ পরিশুদ্ধির মাধ্যম: নামাজ মানুষকে পাপমুক্ত করে পবিত্র জীবনযাপন করতে সাহায্য করে। আল্লাহ বলেন, ‘নামাজ মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করলে মানুষ শুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কারও বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে আর সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তবে তার শরীরে কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে না। ঠিক তেমনই, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ পাপসমূহ মুছে দেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫২৮)।

সমস্যার সমাধানে নামাজ: আল্লাহর সাহায্য পেতে এবং যেকোনো সমস্যায় নামাজের মাধ্যমে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা বাকারাহ, আয়াত: ১৫৩)। নবী (সা.)-এর জীবনে কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে তিনি নামাজ আদায় করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৩১৯)।

গুরুত্ব সহকারে নামাজ আদায়: কোরআনে নামাজিদের প্রশংসার পাশাপাশি, নামাজে অবহেলা করা ব্যক্তিদের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আর দুর্ভোগ ওই নামাজিদের জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন।’ (সুরা মাউন, আয়াত: ৪-৫)। এজন্য সময় মেনে গুরুত্বসহ নামাজ আদায় করা এবং মনোযোগী হওয়া খুবই জরুরি।

TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (1 )