তুমব্রু সীমান্তে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা, আরাকান আর্মির গোলাগুলি
কক্সবাজারের উখিয়ার পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সীমান্ত পোস্ট দখলে নিতে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এবং জান্তা সমর্থিত আরেক বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়েছে। বুধবার গভীর রাত এবং বৃহস্পতিবার ভোরে দুই দফায় এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
তুমব্রু এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবার রাত ১২টা ২৫ মিনিটে সীমান্তের ৩৪-৩৫ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি মিয়ানমারের ভেতরে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। রাতের হামলায় প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। পরদিন ভোর সাড়ে ৫টায় আবারও প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলির শব্দে তুমব্রু গ্রাম এবং বাজার এলাকা কেঁপে ওঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই সংঘর্ষে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সংঘর্ষের পেছনে আরাকান আর্মি এবং জান্তা সমর্থিত আল ইয়াকিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যকার প্রতিপক্ষীয় লড়াইয়ের কথা শোনা যাচ্ছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ শফিক আহমদ জানিয়েছেন, এই গোলাগুলি ছিল এ বছরের সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘ। গত কয়েক মাস সীমান্তে শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করলেও হঠাৎ এই উত্তেজনা সীমান্তবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
তুমব্রু এলাকার ব্যবসায়ী নুরুল আবছার ও বাসিন্দা মোহাম্মদ ফয়েজ আহমেদ জানিয়েছেন, গভীর রাতে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দে তাদের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফয়েজ আহমদের মতে, জান্তা বাহিনীর সমর্থিত বিদ্রোহীরা আরাকান আর্মির দখলে থাকা পোস্ট দখল করতে হামলা চালায়, আরাকান আর্মিও পাল্টা জবাব দেয়।
এদিকে, সীমান্তের পূর্বাংশে জান্তা বাহিনী আরাকান আর্মির একটি পোস্টে বিমান হামলা চালিয়েছে এবং তাদের টহল লক্ষ্য করে হামলা করেছে। অন্যদিকে, ১১ দিন পর বিজিবির ১১ ব্যাটালিয়ন সীমান্তের ৪৪ থেকে ৫০ নম্বর পিলার এলাকায় বুলেটপ্রুফ গাড়ি নিয়ে টহলে ফিরেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মাশরুকি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘটিত গোলাগুলির ঘটনায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের কিছু করার নেই। তবে সীমান্তে টহল, চোরাচালান এবং অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি নিয়মিত কাজ করছে।