খাস জমির দখল নিয়ে যুবদলের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের আড়মবাড়িয়া চরে সরকারি খাস জমি ও ফসলের দখলকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে শিমুল (২৫) নামে যুবদলের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, এবং মহিষের একজন বড় ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে।
আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় আড়মবাড়িয়া চর ও আড়মবাড়িয়া স্কুলপাড়া এলাকায় এই সংঘর্ষ ঘটে।
গুলিবিদ্ধ শিমুল ওই এলাকার রফিক আলীর ছেলে।
ঘটনার পটভূমি:
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের পর যুবদলকর্মী জুয়েল মৃধা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের তাড়িয়ে আড়মবাড়িয়া চরের কয়েক শ একর খাস জমি দখলে নেন এবং সেখানে খেসারি চাষ করেন। তবে জমি ও ফসল দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল যুবদলের আরেক নেতা, মাদকসহ একাধিক মামলার আসামি সোহান হোসেন বিপু ওরফে ল্যাংড়া বিপুর সঙ্গে।
কয়েকদিন আগে জুয়েল খেসারির জমি মহিষ চড়ানোর চুক্তিতে কুষ্টিয়ার রেজাউল বেপারীর কাছে ১০-১২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। শুক্রবার বিকেলে ল্যাংড়া বিপু সশস্ত্র ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে জমি দখল করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। এতে অন্তত ৫০-৬০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়।
পরিস্থিতি ও পুলিশি ব্যবস্থা:
ঘটনার সময় রেজাউল বেপারী তার রাখালদের নিয়ে জমিতে মহিষ চরাচ্ছিলেন। ল্যাংড়া বিপুর লোকজন তাকে আটক করে নৌকায় তুললে উত্তেজনা ছড়ায়। জুয়েল মৃধার নেতৃত্বে আরেকটি সশস্ত্র দল সেখানে পৌঁছায় এবং দুই গ্রুপের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে শিমুল বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, নতুন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের কার্যক্রম:
স্থানীয়রা জানান, ল্যাংড়া বিপু দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা ব্যবসা এবং বিভিন্ন অবৈধ খাজনা আদায়ের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনায় দুই পক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আহত শিমুল পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।