এমপি সাত মাস, উপজেলা চেয়ারম্যান দুই মাস: পটিয়ার রাজনীতির টালমাটাল সময়

এমপি সাত মাস, উপজেলা চেয়ারম্যান দুই মাস: পটিয়ার রাজনীতির টালমাটাল সময়

বছরের শেষ প্রান্তে এসে ক্যালেন্ডারের পাতায় হারিয়ে যাচ্ছে আরেকটি বছর। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় আসনের নেতৃত্বেও ঘটে ব্যাপক রদবদল।

১৫ বছরের দখলদারি এবং বিতর্কিত কার্যকলাপের অবসান ঘটে সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর শাসনের। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অপমানজনক পরাজয়ের মধ্য দিয়ে তিনি পটিয়া ছাড়তে বাধ্য হন। তাঁর স্থলে আসেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি মাত্র সাত মাস সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করতে পারেন। একইভাবে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও দুই মাসের মাথায় তাঁর অধ্যায়ও শেষ হয়।

বিতর্কিত হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর উত্থান ও পতন
২০০৮ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সামশুল হক চৌধুরীর সম্পদের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ১৫ বছরে তাঁর আয় ও সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। তবে সম্পদ বিবরণীতে তিনি সম্পদের মূল্য ‘শায়েস্তা খাঁ আমলের’ মতো উল্লেখ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। দুদকের তদন্তে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠে আসে। তাঁর পরিবারেও বিত্ত-বৈভবের ছাপ স্পষ্ট, যা নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।

সামশুল হক চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রভাব দীর্ঘদিন ধরে পটিয়ার সর্বত্র বিস্তৃত ছিল। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাঁর পরিবারতন্ত্র, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং দখল-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করেছেন। সরকারের পতনের পর তাঁর পরিবারও দেশ ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও দিদারুল আলমের বিতর্কিত অধ্যায়
মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম দেন। তাঁর নেতৃত্বে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠনসহ একাধিক পদক্ষেপে তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, পটিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যুবলীগ নেতা দিদারুল আলমকে জয়ী করতে কারচুপির অভিযোগও উঠেছে। তবে ক্ষমতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের অধ্যায়ও দ্রুত শেষ হয়।

পটিয়ার এই রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি নতুন নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য একটি গভীর প্রশ্ন রেখে গেল।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )