
ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি নিহত
গাজা যুদ্ধের পরবর্তী দুই বছরে ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস–ইসরায়েল (পিএইচআরআই) জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৯৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মৃত্যুবরণ করেছেন। ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃত্যু বিষয়ে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় তথ্য।
সংগঠনটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি নথি, চিকিৎসা প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত, চিকিৎসাকর্মীদের সাক্ষ্য এবং মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করেই এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের দাবি—ইসরায়েল মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা গোপন করছে, আর প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে।
‘পরিকল্পিত নীতিতে হত্যা চলছে’—অভিযোগ মানবাধিকার সংগঠনের
পিএইচআরআই জানায়, বন্দিদের ওপর ইসরায়েল সাংগঠনিক নির্যাতন, পরিকল্পিত হত্যার নীতি ও চিকিৎসা অবহেলা প্রয়োগ করছে। সংগঠনের প্রকল্প সমন্বয়কারী ওনেগ বেন দ্রর বলেন—
“এই মৃত্যুর সংখ্যা প্রমাণ করে, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে বন্দিদের হত্যা করছে এবং চিকিৎসা না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
৯৪ জনের মৃত্যু নথিভুক্ত, অতিরিক্ত ৪ জনের তথ্য নতুন
প্রতিবেদনে বলা হয়—২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত ইসরায়েলি কারাগারে ৯৪ জনের মৃত্যু আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত হয়েছে। আর চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে আরও চার বন্দির মৃত্যুর তথ্য যুক্ত হয়েছে।
এই হিসাবের মধ্যে গ্রেপ্তারের পরপরই গুলি করে হত্যা করা সাতটি ঘটনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
মৃতদের ৫২ জনই গাজা থেকে আটক
মোট মৃতদের মধ্যে ৫২ জনই গাজায় অভিযান চালিয়ে আটক করা ফিলিস্তিনি। তাদের অধিকাংশই বিচারহীন অবস্থায় কারাগারে ছিলেন বলে অভিযোগ সংগঠনটির।
এ বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং প্রিজন সার্ভিস কোনো মন্তব্য করেনি।
গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ, যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি। পাশাপাশি হাজারো ফিলিস্তিনিকে আটক করে বিভিন্ন কারাগারে নিয়ে যায় ইসরায়েলি বাহিনী—যেখানে ইসরায়েলি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মৃত্যুর অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে।

