ইলিশ শিকারে জেলেদের নানা নিষেধাজ্ঞা, কিন্তু কিস্তির চাপ বহাল

ইলিশ শিকারে জেলেদের নানা নিষেধাজ্ঞা, কিন্তু কিস্তির চাপ বহাল

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাজে সন্দ্বীপ গ্রামের মাহেনুর বেগমের আট সদস্যের পরিবার ইলিশ শিকার করে জীবন চালায়। ঝড়ে নৌকা-জাল হারানোর পর বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবারও জীবিকা শুরু করেছেন তারা। বর্তমানে মাহেনুর বেগমের পরিবার প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণের বোঝা বইছে। সাপ্তাহিক কিস্তির চাপ এতটাই বেশি যে, কোনোভাবেই তা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।

মাহেনুর বেগম জানান, তাদের পরিবারে কোনো বিলাসিতা নেই; কিন্তু কিস্তির চিন্তায় দিন শুরু হয়। স্বামী নেছার হাওলাদার বলেন, নদীতে আগের মতো মাছ নেই। ফলে আয়ও কমেছে। কিন্তু খরচ ও ঋণের চাপ বেড়েই চলেছে। তিনি বলেন, “যে জালে দুইটা মাছ ধরা পড়ে, ওই জাল দিয়েই চালাই। বৈধ-অবৈধ এসব হিসাব করার সুযোগ নেই।”

স্থানীয় অন্য জেলেরা একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের বোঝা তাদের মাথায়। পাশাপাশি মাছের আকাল ও উপার্জনের অভাবে কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় নতুন করে ধারদেনা করতে হচ্ছে।

জেলেদের অভিযোগ, ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময় ঋণের কিস্তি আদায়ে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না। এনজিও কর্মীরা কিস্তি না দিলে নতুন ঋণ পেতে সমস্যার মুখোমুখি করেন।

এ প্রসঙ্গে এনজিও কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, জেলেদের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করা হয় না। তবে জেলেরা জানিয়েছেন, নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ না করলে পরে ঋণ নিতে সমস্যা হয়।

জানা গেছে, পটুয়াখালীর জেলেরা ঋণের চক্রে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় এক জেলের ভাষায়, “নদীতে মাছ কম, অথচ কিস্তি ঠিকই আদায় হচ্ছে।” পরিস্থিতি এমন যে, নিষেধাজ্ঞা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মাছের আকাল—কোনো কিছুই কিস্তির নিয়মে ছাড় দেয় না।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )