আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে ছয় ইস্যুতে কঠোর করণীয় চূড়ান্ত করবে সরকার
সরকারবিরোধী দেশি-বিদেশি অপপ্রচার, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে তাবলিগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব, গার্মেন্টস ও ঔষধশিল্প প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা, পার্বত্য এলাকায় সশস্ত্র গ্রুপের অপতৎপরতা, আসন্ন থার্টিফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের সফলতা—এই ছয়টি ইস্যুতে উদ্বিগ্ন সরকার। এসব নিয়ে করণীয় নির্ধারণে আজ রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও কমিটির আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে সরকারের ১১ জন উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে আগের কার্যবিবরণী পর্যালোচনা, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বড়দিন, বিজয় দিবস এবং থার্টিফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠকের মূল ইস্যুগুলো:
দেশি-বিদেশি অপপ্রচার রোধ:
সরকারবিরোধী মিথ্যা প্রচারণা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে দ্বন্দ্ব:
তাবলিগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার কারণে ইজতেমা মাঠে অরাজকতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনা চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
গার্মেন্টস ও ঔষধশিল্পে বিশৃঙ্খলা:
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ ও মালিকপক্ষের দায়িত্বহীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকার। একইভাবে, ঔষধশিল্পেও অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে।
পার্বত্য এলাকায় সশস্ত্র গ্রুপ:
পার্বত্য জেলাগুলোতে সশস্ত্র গ্রুপগুলোর অপতৎপরতা রোধে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।
থার্টিফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা:
বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার:
অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রমে সন্তোষজনক অগ্রগতি না হওয়ায় অভিযান আরও জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারবিরোধী প্রচারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা:
উপদেষ্টারা জানান, দেশি-বিদেশি মিথ্যা প্রচারণা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যায়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি দেশের ভেতরে অপপ্রচার বন্ধে কঠোর নজরদারি থাকবে।
শ্রমিক অসন্তোষের কারণ:
গার্মেন্টস খাতে কিছু মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন না দেওয়ায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ঝুট ব্যবসা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কোন্দল পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।
পার্বত্য অঞ্চলে নজরদারি বাড়ানো হবে:
পার্বত্য এলাকায় সশস্ত্র গ্রুপগুলোর কার্যক্রম বন্ধে অভিযানের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা হবে।
বৈঠকের প্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত:
গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিশ্লেষণ ও আলোচনার মাধ্যমে আজকের বৈঠকে সরকার এসব ইস্যুতে চূড়ান্ত পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেবে।
এ বৈঠককে ঘিরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বাহিনীগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।