অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানির পাওনা বকেয়া, সংকটে ২৩ পোশাক কারখানা
অস্ট্রেলিয়ার মোজেইক ব্র্যান্ডসের কাছে পাওনা অর্থ না পাওয়ায় চরম সংকটে পড়েছে বাংলাদেশের ২৩টি পোশাক কারখানা। এই দেনার কারণে তিন হাজারেরও বেশি শ্রমিক তাদের বেতন নিয়ে শঙ্কায় আছেন। বকেয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার বা ৩০ কোটি টাকা।
কর্মীদের দুর্দশা
গাজীপুরের পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশনস ফ্যাক্টরির কর্মী ইয়াসমিন লাবনী জানান, “মাস শেষে বেতন না পেলে সন্তানদের খাওয়ানোর মতো অবস্থাও থাকবে না।” একই কারখানার আরেক কর্মী মো. আলম মিয়া বলেন, “বেতন না পেলে চিকিৎসা খরচও চালানো সম্ভব হবে না।”
মোজেইক ব্র্যান্ডসের অবস্থান
অস্ট্রেলিয়ান ব্র্যান্ডটি দাবি করেছে, তারা দেউলিয়া হওয়ার পথে। তাদের মুখপাত্র জানিয়েছেন, কোম্পানি পাঁচটি ব্র্যান্ড বন্ধ করে পুনর্গঠন কার্যক্রমে মনোযোগ দিচ্ছে।
পদ্মা শাতিল ফ্যাশনসের পরিচালক জাবেদ আহমেদ বলেন, “গত জুন থেকে পাওনা পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে আসছি। তবে মোজেইক তাদের পোশাক সরবরাহ বন্ধ রাখতে বলেনি, বরং বাকি অর্থ দ্রুত পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছে।”
কারখানা মালিকদের অভিযোগ
বাংলাদেশ ছাড়াও চীন ও ভারতের অনেক কারখানা মোজেইকের কাছে অর্থ পায়। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অডিটের দাবি জানিয়েছেন সরবরাহকারীরা।
বাংলাদেশের সুলতানা সোয়েটার্সের ম্যানেজার সারওয়ার হোসেইন বলেন, “আমাদের কারখানা মোজেইকের কাছে ১০ লাখ ডলার পাওনা। বেতন ও অন্যান্য খরচ চালাতে গিয়ে চরম অর্থসংকটে পড়েছি।”
বিজিএমইএ’র প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, কোভিড-১৯ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতায় পোশাক খাত আগেই সমস্যায় ছিল। এর ওপর মোজেইকের মতো প্রতিষ্ঠানের পাওনা পরিশোধ না করা শ্রমিকদের দুর্দশা বাড়িয়েছে।
সমাধানের উদ্যোগ
বিজিএমইএ অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। দূতাবাস থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, “মোজেইকের এ ধরনের কর্মকাণ্ড অস্ট্রেলিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।”
পাওনা অর্থ আদায় না হলে বাংলাদেশের পোশাক খাতের সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।