অজুর পর যে দোয়া পাঠে খুলবে জান্নাতের ৮ দরজা

অজুর পর যে দোয়া পাঠে খুলবে জান্নাতের ৮ দরজা

52 / 100 SEO Score

অজুর পরের দোয়া, ওজুর পর দোয়া, অজুর পরে জান্নাতের দোয়া—একজন মুসলিমের আমলে এই ছোট দোয়াটিই হতে পারে জান্নাতের ৮ দরজা খুলে দেওয়ার বড় হাতিয়ার। অজুর পর যে দোয়া পড়তে রাসুলুল্লাহ (সা.) শিখিয়েছেন, সে দোয়ার ফজিলতে জান্নাতের সব দরজা তার জন্য খুলে যাবে বলে হাদিসে সুসংবাদ এসেছে।

পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা মুসলিম জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াতসহ অনেক ইবাদতের আগে অজু করা শর্ত বা উত্তম আমল। আর অজু শেষ করে অজুর পরের দোয়া পড়া সুন্নত ও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ কাজ।

অজুর পরের দোয়া (আরবি, উচ্চারণ ও অর্থ)

আরবি:
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَّوَّابِينَ وَاجْعَلْنِي مِنَ الْمُتَطَهِّرِينَ

উচ্চারণ:
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু, আল্লাহুম্মাজআ’লনি মিনাত্তাওয়াবীন, ওয়াজআ’লনি মিনাল मुतাতাহহিরীন।

অর্থ:
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং যারা পবিত্রতা অর্জন করে তাদের দলভুক্ত করুন।”

অজুর পরের দোয়া পড়লে জান্নাতের ৮ দরজা খুলে যাবে

হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন,

“যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করবে, তারপর (অজুর পরের দোয়া হিসেবে) এই দোয়া পড়বে… তার জন্য জান্নাতের আট দরজা খুলে দেওয়া হবে; সে ইচ্ছামতো যে দরজা দিয়ে খুশি, সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে।”
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩৪; তিরমিজি, হাদিস : ৫৫)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, অজুকে শুধু বাহ্যিক পবিত্রতা না ভেবে আন্তরিক তওবা, ঈমানের সাক্ষ্য আর অজুর পরের দোয়া দ্বারা আল্লাহর নিকট বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে।

এই দোয়া থেকে যে শিক্ষা পাওয়া যায়

১. অজু হবে সুন্দর ও সম্পূর্ণ:
হাদিসে “সুন্দরভাবে অজু” করার শর্ত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ অজুর সব অঙ্গ ঠিকভাবে ধোয়া, সুন্নত ও আদব মানা এবং মনোযোগসহ অজু সম্পন্ন করা জরুরি।

২. তাওবার মানসিকতা:
অজুর পরের দোয়া–তে ‘তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন’—এই দোয়ার মাধ্যমে বান্দা প্রতিদিন বহুবার নিজেকে সংশোধনের অঙ্গীকার করে। অজুর পর দোয়া তাই শুধু মুখস্থ পড়া নয়, বরং গুনাহ ছেড়ে সৎপথে ফেরার দৃঢ় অঙ্গীকারও বটে।

৩. পবিত্রতার গুরুত্ব:
দোয়ার শেষাংশে ‘পবিত্রতা অর্জনকারীদের’ দলে শামিল হওয়ার আবেদন আছে। এতে বোঝা যায়, বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতা ও অন্তরের পবিত্রতা—দুই দিকেই খাঁটি থাকার জন্য দোয়া করতে হবে।

৪. জান্নাতের সব দরজার আশা:
ফরজ নামাজ, নফল, সিয়াম, দান–সদকা—বিভিন্ন আমলের ভিত্তিতে জান্নাতের দরজাগুলোর নামকরণ। অজু শেষে অজুর পরের দোয়া পড়া একজন মুমিনের জন্য জান্নাতের ৮টি দরজাই খুলে দেওয়ার বিশেষ সম্মান।

তাই প্রতিবার অজু শেষেই অজুর পরের দোয়া পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। অল্প কয়েক মুহূর্ত সময় নিলেও এর বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে জান্নাতের বিশাল পুরস্কারের সুসংবাদ দিয়েছেন।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )